রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:১২ পূর্বাহ্ন
মোংলা প্রতিনিধি: নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালেদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ১৯৯৬ সাল থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মোংলা বন্দরের উন্নয়নের কাজ শুরু করেন। ফলে বন্দরে জাহাজ আগমন বৃদ্ধির সাথে প্রতিবছরই কার্গো হ্যান্ডলিং,কন্টেইনার হ্যান্ডলিং ও কার হ্যান্ডলিং পরিমান বৃদ্ধি পায় যা বর্তমানে দৃশ্যমান। তাই মোংলা সমুদ্র বন্দরের কার্যক্রম গতিশীল বাড়াতে নানা উদ্যোগ গ্রহন করেছে সরকার। যখন বন্দর অচল ছিল তখন এখানকার বন্দর ব্যাবহারকারীরা এ বন্দর থেকে মুখ ফিড়িয়ে চট্রগ্রাম বন্দরের দিকে আগ্রহ বাড়িয়ে তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছিল। চলমান ড্রেজিংয়ের ফলে বন্দর চ্যানেল নাব্যতা সংকট দুর হয়েছে। দেশী-বিদেশী বানিজ্যিক জাহাজের আগামনও আগের তুলনায় অনেকগুন বেড়েছে। দেশকে এগিয়ে নিতে সরকারের উন্নয়ন মুলক কর্মকান্ড পদ্মা সেতু, রেল লাইন, তাপ বিদ্যুত কেন্দ্র, খানজাহান আলী বিমান বন্দরের কাজ চলমান রয়েছে। আর মোংলা বন্দরসহ দক্ষিনাঞ্চল আধুনিক করার জন্য চলমান কাজগুলো সম্পুর্ন হলে এ বন্দর আর আগের বন্দর থাকবে না। তাই আগামীর সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সরকার ও মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ সকল কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। দক্ষিনাঞ্চলের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে ২০২১ সালে মোংলা হবে বিশ্বের অন্যতম সমুদ্র বন্দর। মোংলা বন্দরের উপদেষ্টা কমিটির ১৫তম সভায় এমন মন্তব্য করেন নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী।
খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, রাজনৈতিক হীনমন্যতার কারণে ২০০১ সালে বন্দরটি প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, সরকার প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেক নজর থাকায় এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উদ্যেগের ফলে ২০০৯ সাল থেকে ঘুড়ে দাড়িয়েছে এ বন্দর। একটি লোকশান প্রতিষ্ঠান থেকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে, ভবিষ্যতে বন্দরের অনেক জমি প্রয়োজন হবে তাই বন্দরের জমি বরাদ্দ না দেয়ার জন্য পরামর্শ দেন তিনি। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় বন্দর কর্তৃপক্ষের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় মোংলা বন্দরের উন্নয়ন ও আধুনিকায়নে, বন্দর ব্যবহারকারীদের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি, চ্যানেলের নাব্যতা সংরক্ষণ ও বয়া স্থাপন, ছোট ছোট লাইটার থেকে পণ্য খালাসের জন্য পন্টুন স্থাপন, জাহাজ বাধার জন্য মুরিং বয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি করা, নতুন নতুন ইকুইপমেন্ট সংযোজন, মোংলা-খুলনা সড়ক সম্প্রসারণ, খান জাহান আলী বিমান বন্দর নির্মাণ, খুলনা-মোংলা রেললাইন স্থাপন ও পদ্মা সেতু নির্মানের ফলে মোংলা বন্দরের যে কার্যক্রম বৃদ্ধি পাবে তার চ্যালেঞ্জ সমূহ গ্রহণের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়। এসময় খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক, বাগেরহাট-৪ আসনের সংসদ সদস্য ডাঃ মোজ্জাম্মেল হক, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড মহা-পরিচালকের প্রতিনিধি পশ্চিম জোনের জোনাল কমান্ডার ক্যাপটেন এম মিনারুল হক, খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মোঃ লোকমান হোসেন মিয়া, খুলনা বিবাগীয় পুলিশ কমিশনার মোঃ লুৎফুল কবির, বারবিডার সভাপতি আবদুল হক, খুলনা চেম্বারের সহ-সভাপতি মোস্তফা জেসান ভূট্র, মোংলা বন্দর ষ্টিভিডরস এসোসিশেনের সভাপতি মোঃ জাহিদ হোসেন, নৌ-পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব পল্টু খানসহ সরকারের ও বন্দরের উদ্ধোতন কর্মকর্তা ও বন্দরের বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্ধ উপস্থিত ছিলেন। সভার শুরুতে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোজ্জাম্মেল হক, বন্দরের চলমান সকল প্রকল্প ও প্রয়োজনীয় ইকুপমেন্ট সম্পর্কে বন্দর প্রতিমন্ত্রীকে অবহিত করেন। সভায় বন্দরের বিদ্যমান নানা সমস্যা তুলে ধরে ব্যবসায়ীরা বলেন, বন্দরের কন্টেইনার ইয়ার্ড ব্যবহারের অযোগ্য তাই একটি নতুন শেড নির্মানের দাবি করেন তারা। এছাড়াও এ বন্দরকে আরো আধুনিক ও গতিশীল করতে বেশ কয়েকটি বিষয়ের উপর আলোকপাত করেন বন্দর ব্যাবহারকারী ও ব্যাবসায়ীরা। মোংলা পোট পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব মোঃ জুলফিকার আলী বলেন, খুলনার রুজবেল্ট জেঠির আদলে মোংলা বন্দরে একটি আধুনিক জেঠি নির্মান এবং সুপেয় পানি সংরক্ষনের জন্য সু ব্যবস্থা করতে হবে। কন্টেইনার হ্যান্ডলিং এর সক্ষমতা কাজে লাগাতে একটি ডিপো নির্মানের দাবি করেন বাগেরহাট চেম্বারের সভাপতি লিয়াকত আলী। মোংলায় একটি বন্দর থানা নিমার্নের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন বাগেরহাট পুলিশ সুপার পংকজ কুমার। নৌ চলাচল নিরাপদ রাখতে বন্দর চ্যানেলে নেভিগেশন ব্যবস্থা উন্নোতি করার আহবান জানানো হয় নৌ বাহিনীর পক্ষ থেকে। সভায় মোংলা বন্দর কতৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম মোজ্জাম্মেল হক সকলের উদ্দ্যেশে জানান, মোংলা বন্দর সংলগ্ন বিমান বন্দর, তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, রেল লাইন ,পদ্মা ব্রীজ নির্মিত হলে দিগুন রাজস্ব আয় করবে মোংলা বন্দর। উপদেষ্টা কমিটির সভা শেষে বিকাল ৩টায় প্রতিমন্ত্রী মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্মচারী সংঘ (সিবিএ) এর দ্বি-বার্ষিক সাধারণ নির্বাচন’র নব নির্বাচিত কার্যনির্বাহী পরিষদের অভিষেক অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান করেন। সকাল সাড়ে ৯টায় নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব গ্রহনের পর প্রথম বারের মতো মোংলা বন্দর জেটি এলাকাসহ বন্দরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা পরিদর্শন করলেন প্রতিমন্ত্রী।